কক্সবাজার, সোমবার, ৬ মে ২০২৪

অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা..

উখিয়ায় মশা-মাছির উপদ্রবে নাকাল জনজীবন

মোহাম্মদ ইব্রাহিম মোস্তফা, উখিয়া বার্তা ডটকম::
বাসায়, দোকানে, ফুটপাতে গাড়িতে যেন চলছে মশা মাছির রাজত্ব। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, মশা মাছি নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না উপজেলা প্রশাসন। যে কারণে রাতে মশা দিনে মাছি’র অসহনীয় উৎপাতে উখিয়ায় নাগরিক জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
বিশেষ করে অপরিস্কার, অপরিচ্ছন্নতা, দীর্ঘদিন ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পানি নিস্কাশন অচল হয়ে পড়ার কারণে মশা মাছির উপদ্রব মাত্রাতিরিক্ত ভাবে বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে সচেতন মহল মশা মাছি নিধনে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা প্রশাসন বরাবরে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি উত্থাপন করার প্রস্তুতি নিয়েছে।
উখিয়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি একরামুল হক জানান, এ উপজেলার বৃহত্তম বাণিজ্যিক কেন্দ্র উখিয়া বাজার থেকে সপ্তাহে ২ দিন কোটি টাকার স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী লেনদেন হয়ে থাকে। তৎমধ্যে আমিষ জাতীয় পণ্য মাছ, পান, সুপারি ও তরিতরকারি অন্যতম। উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এ বাজারে পানি নিস্কাশনের জন্য ড্রেন থাকলেও তা অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
ড্রেনের পচাঁ দূর্গন্ধে মশা মাছির উপদ্রব বেড়েছে আশংকাজনক ভাবে। ফলে ক্রেতাবিক্রেতাদের অসহনীয় দূভোর্গ পোহাতে হচ্ছে। এব্যাপারে হাটবাজার মনিটরিং কমিটির নিকট বিষয়টি উত্থাপন করলেও কোন কাজ হয়নি।
ইউএনডিপি ও ব্র্যাকের অর্থায়নে কিছু সংখ্যক পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগ করলেও তারা ময়লা আবর্জনাগুলো অপসারণ করে দায়িত্ব শেষ করতে দেখা গেছে।
বাজারের ব্যবসায়ী পরিমল সেন জানান, মশার কামড় থেকে শরীর রক্ষায় বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে কয়েল ব্যবহার করেও কোন কাজ হচ্ছে না। এক সময় কয়েল জ্বালালে মশা পালিয়ে যেত। এখন কয়েল, স্প্রে ছিটালেও মশা দূর হয় না।
তিনি জানান, দিনে মাছি রাতে মশার উপদ্রবে চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। মশা মাছি অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার নেপথ্যে তিনি বাজারের অপরিস্কার অপরিচ্ছন্নতা ও অপ্রতুল ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে দায়ী করেছেন।
মানবাধিকার কর্মী বেলাল উদ্দিন অভিযোগ করে জানান, মশা নিধনে উপজেলা পর্যায়ে যথেষ্ট পরিমাণ উপকরণ থাকলেও তা তৃণমূল পর্যায়ে ব্যবহৃত হয়নি। শুধুমাত্র উপজেলা পরিষদের পূর্ব নির্ধারিত কয়েকটি স্থানে মশা নিধন করার জন্য ব্যবহৃত স্প্রে ছিটিয়ে তাদের দায়িত্ব শেষ করেছেন।
ওই মানবাধিকারকর্মী জানান, রোহিঙ্গা আসার পর থেকে জনবসতি যেভাবে বেড়েছে সেভাবে সরকারি ভাবে মশা মাছি নিধনকল্পে কোন উদ্যোগ না নেওয়ার কারণে অসহনীয় পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে সাধারণ জনগনকে। সামনে শুস্ক মৌসুমে মশা মাছির উপদ্রব আরো বেড়ে গেলে জনজীবন বিপন্ন হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।
উখিয়া সদর রাজাপালং ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, উখিয়া সদর এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় ইউএনডিপি ও ব্র্যাকের যৌথ উদ্যোগে পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও উখিয়া সদর এলাকার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থান গুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার আওতায় এনে স্বাস্থ্য সম্মত নাগরিক জীবন উপহার দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি রয়েছে। আগামী শুস্ক মৌসুমে মশা মাছি নিধনে কার্যকর ভূমিকা রাখা হবে।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, গ্রীষ্ম আগমনের সঙ্গে মশার তীব্রতাও বেড়ে গেছে। শীত মৌসুমে বৃষ্টি না থাকায় নালা-নর্দমার পানির ধারা স্থির রয়েছে। যার কারণে অন্য সময়ের তুলনায় মশার প্রজনন হারও বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা পর্যায়ে চাহিদামত
মশা মাছি নিধনের উপকরণ না থাকায় ব্যাপক আকারে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। তবে এব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিদের সহযোগীতায় উপজেলার সর্বত্রে মশা মাছি নিধনের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও হাটবাজার গুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য ইজারাদারদের নিদের্শ দেওয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত: