কক্সবাজার, শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪

উখিয়ায় সন্ত্রাসীদের হামলায় স্কুল ছাত্রীসহ আহত ৫, থানায় অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক::

কক্সবাজারের উখিয়ায় ডাকাত শাহ আলম বাহিনীর হামলায় সোনাইছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীসহ একই পরিবারের ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজন স্কুল ছাত্রী চার জন নারী ও একজন পুরুষ উখিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সোনাইছড়ির বাদামতলি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এবিষয়ে জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি গ্রামের মৃত হাসান আলীর পুত্র শাহ আলম প্রকাশ ডাকাত শাহ আলম (৪৪) ও শামশুল আলম(৪৫), ফজল আহমদের পুত্র আক্তার মিয়া(৪৫) এদের বিরুদ্ধে রওশন আরা বাদী হয়ে উখিয়া থানায় একটা অভিযোগ দায়ের করেছেন৷

আহতরা হলেন- রওশন আরা (৪২), রওশন আরা মেয়ের জামাই জসিম উদ্দিন (৩০), রওশন আরা মেয়ে শাকিলা আক্তার লাকি (২৫), সোনাইছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও রওশন আরা মেয়ে ইয়াছমিন আক্তার (১৬) ও রওশন আরা মেয়ে ছামিরা আক্তার (২১)৷

আহত রওশন আরা (৪২) বাদী হয়ে উখিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন৷ এসময় তিনি জানান, আজ মঙ্গলবার দুপুরে মৃত হাসান আলীর পুত্র এলাকার চিহ্নিত ডাকাত শাহ আলম জালিয়াপালং ইউনিয়নের পার্শ্বে গ্রামে আমার মেয়ে জীবিকা নির্বাহের জন্য শাকিলা আক্তার লাকি মুদির দোকান করতেন৷ ডাকাত শাহ আলম দোকানে গিয়ে মালামাল ক্রয় করতেন৷ একদিন দোকানে কেউ না থাকাতে আমার মেয়েকে একা পেয়ে শরীরের স্পর্ষ কাতর হাত দিলে আমার মেয়ের স্বামীকে এবং এলাকায় গন্যমান্য লোকজনকে সালিশ দিলে ডাকাত শাহ আলম আমার মেয়ের জামাই জসিম উদ্দিন (৩০) এর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসছিল৷

তিনি আরও জানান, এরই ধারাবাহিকতায় আমার মেয়ে শাকিলা আমার ঘর থেকে বেড়াইয়া যাওয়ার পথে ডাকাত শাহ আলমের বাড়ির সামনে পৌঁছালে অতর্কিত ভাবপ এলোপাতাড়ি বুকে, পিঠে, মাথায়, মুখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারতে থাকেন৷ এসময় তার কাছে থাকা ৫০ হাজার টাকা এবং একটি ১৪ হাজার টাকার মূল্যের একটি মোবাইল ও আরও একটি ১২০০ টাকার ছোট মোবাইল নিয়ে ফেলেন ডাকাত শাহ আলম বাহিনী৷

তিনি আরও জানান, এসয়ম আমার মেয়ে ইয়াছমিন আক্তার (১৬) সোনাইছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে ঘটনা স্থলে আসলে আমার বড় মেয়ে শাকিলাকে উদ্ধার করতে চাইলে ডাকাত বাহিনীর আক্তার মিয়া এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন৷ এরপরে চুল ধরে টানা হেছড়া করে মাটিতে ফেলে মারতে থাকেন৷ তার কাছে থাকা ৩জুড়া কানের দুল ৪০ হাজার টাকার এবং একটি বড় মোবাইল ৩০ হাজার টাকার নিয়ে ফেলেন৷ সবমিলিয়ে ৯৫ হাজার টাকার স্বর্ণ এবং ছোটবড় ৫টি ৫০ হাজার টাকা মোবাইল নিয়ে ফেলেন ডাকাত শাহ আলম বাহিনী৷

এদিকে সোনাইছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইয়াছমিন আক্তার(১৬) জানান, আমি স্কুল থেকে রেজাল্ট দেখে বাড়ি ফেরার পড়ে আমাকে যে বেধড়ক মারধর করেছে আমি তার উপযুক্ত বিচার চাই৷ আমি গরিব পরিবারের মেয়ে বলে বিচার নাও পেতে পারি তাবে একজন শিক্ষার্থী হিসেবে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেন৷

অভিযোক্তা শাহ আলমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় জেনে মোবাইল কেটে দেন৷

উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজিজ বলেন, শাহ আলম আগে ডাকাত ছিল কিন্তু এখনো ডাকাতি করেকিনা সে বিষয়ে আমার জানা নেই৷ তবে অনেকে বলেছে সে খারাপ লোক এবং ইয়াবা ও মানবপাচার ব্যবসার সাথে জড়িত আছে।

ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ অলিউর রহমান থেকে জানতে চাইলে তিনি জানান, ঘটনার বিষয়টি শুনেছি, তারা চিকিৎসা নেওয়ার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিল কিন্তু পরে কি হয়েছে সেটা এখনো জানা নেই৷ তবে অপরাধী যত শক্তিশালী হউক অপরাধী অপরাধীই৷ অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে৷

এবিষয় উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: