প্রকাশ:
২০২২-০৮-২২ ২২:২৯:২৯
আপডেট:২০২২-০৮-২২ ২২:৩০:৩৯
বাস র্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি প্রকল্পের বক্স গার্ডার দুর্ঘটনায় রাজধানীর উত্তরায় পাঁচজনের মৃত্যুর চার দিন পর নিরাপত্তা বেষ্টনী বসিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। তবে যে বেষ্টনী বসানো হচ্ছে, সেটি পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ের কথা বলছেন ওই সড়ক নিয়ে চলাচলকারীরা।
কেবল পথচারীরা নন, বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক হাদিউজ্জামানও সব শুনে বলেছেন, এভাবে নিরাপত্তা বেষ্টনী দেয়া হলে সেটি আন্তর্জাতিক যে মান, তার লঙ্ঘন হবে।
বাদল হোসেন নামের একজন পথচারী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি হচ্ছে ঠিকই, তবে এটি যেখানে কাজ চলছে তার খুব কাছাকাছি। এতে নিরাপত্তা কতটুকু নিশ্চিত হবে সেটি স্পষ্ট নয়। বেষ্টনী আরেকটু দূরে দেয়া যেত। তবে সে ক্ষেত্রে রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে যাবে। জনগণের ভোগান্তি বাড়বে। সে ক্ষেত্রে এখানে ট্রাফিক পুলিশ থাকতে হবে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে। এখানে কোনো ট্রাফিক পুলিশ নেই।’
সমস্যা হলেও নিরাপত্তায় আরও জোর দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছুটা ভোগান্তি সহ্য করা যায়। কিন্তু দুর্ঘটনা থেকে সুরক্ষা আগে জরুরি।’
আরেকজন পথচারী মালেক মিয়া বলেন, ‘এই বেষ্টনী যেভাবে করা হচ্ছে, তাতে দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে কি না সেটা যথেষ্ট সন্দিহান। কারণ, এটা মজবুত নয়। ক্রেন থেকে আবার কিছু পড়ে গেলে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব না। তাই আমরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারছি না।’
গত ১৫ আগস্ট নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি না করে ক্রেন দিয়ে বক্স গার্ডার তুলে একটি গাড়িতে রাখার সময় সেটি পড়ে যায় একটি চলন্ত গাড়িতে। এতে সেই গাড়ির পাঁচ আরোহী পিষ্ট হয়। বেঁচে যান দুই আরোহী।
এই প্রাণঘাতি দুর্ঘটনার পর গোটা প্রকল্পে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। এরপর করপোরেশনের সঙ্গে বিআরটি প্রকল্পের আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয় পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেই কাজ চলবে।
সোমবার কাজ শুরুর পর দুর্ঘটনাস্থল জসিম উদ্দীন মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, জনা চারেক কর্মী কাজ করছেন। তারা চার মিলিমিটার রডের পেরেক, টিন আর অ্যাঙ্গেল দিয়ে তৈরি করছিলেন নিরাপত্তা বেষ্টনী।
নিরাপত্তা কর্মী বিদ্যুৎ কুমার দৈনিক বাংলাকে বলেন ‘এখানে দায়িত্বরত প্রকৌশলীদের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। নিরাপত্তা বেষ্টনীর কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফ্লাইওভারের কাজ বন্ধ থাকবে।’
সেখানকার কর্মীদের বক্তব্য এবং নিরাপত্তা বেষ্টনী নিয়ে পথচারীদের সংশয়ের বিষয়ে কথা বলতে প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর পাওয়া গেল একজন প্রকৌশলীকে। কর্মচারীরা তাকে দেখিয়ে দিয়ে বলেন নাম জহির। তবে প্রশ্ন শুনে সেই কর্মকর্তা নিজের পরিচয় লুকিয়ে বলেন, ‘আমি এখানকার কেউ না। আমি দেখতে এসেছি। এরপর হনহন করে তিনি হেঁটে চলে যান।
আরেক প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেনের কাছ থেকেও প্রশ্নের কাঙ্ক্ষিত জবাব পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তা বেষ্টনীর কাজ শুরু করেছি। খুব দ্রুতই শেষ হয়ে যাবে আশা করছি। বেষ্টনীর কাজ শেষ না হলে আমরা ফ্লাইওভারের কাজ শুরু করব না।’
এই বর্ণনা জানানোর পর বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক হাদিউজ্জামান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমার মনে হয় না টিন দিয়ে ঘেরাও দেয়া কোনো বেষ্টনী নিরাপত্তার স্ট্যান্ডার্ড এর মধ্যে পড়ে। সেটাকে অবশ্যই মজবুত হতে হয়, যেন যানবাহনের ক্ষয়ক্ষতি এবং জনসাধারণের জীবন হুমকির মধ্যে না পড়ে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সামনে অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে। মেট্রোরেলের ব্যারিকেড ব্যবস্থাপনা, থার্ড টার্মিনালের ব্যবস্থাপনা, তারা একটা ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড মেনে কাজ করছে। এক্ষেত্রেও তাদেরকে (বিআরটি) একটা ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড অবশ্যই মেনে চলতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’
সেখানে কাজ করা একজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে বলেন, যত জন লোক দিয়ে কাজ করানো উচিত, তাদেরকে কর্মী দেয়া হয়েছে অনেক কম। এ কারণেই তিন বছরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ১০ বছরেও শেষ হয়নি প্রকল্প।
এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন ‘যেখানে এই কাজের জন্য ২ হাজারের বেশি শ্রমিক প্রয়োজন সেখানে কাজ করছে ৩০০ জন। এয়ারপোর্ট থেকে গাজীপুর পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার ফ্লাইওভার এর প্রজেক্টে প্রতি কিলোমিটারে ১৯ টি সেন্টারে ভাগ করে কাজ চলছে। প্রতিটি সেন্টারে কমপক্ষে ৮০ থেকে ১০০ জন দরকার। অথচ কাজ করছে ১০ জন। প্রয়োজনীয় সংখ্যক লোক সংখ্যা থাকলে কাজ শেষ করতে এত সময় লাগত না। জনগণের ভোগান্তিও বাড়ত না।’
তিনি আরও বলেন, ‘চীনা যে কোম্পানির (সিজিজিসি) আওতায় কাজ চলছে, তাদের ঢাকায় কর্মরত ব্যক্তি ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন। এরপর থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তবে ১৫ আগস্ট দুর্ঘটনার আগে থেকে তিনি সরাসরি তাদেরকে স্পটে এসে নির্দেশনা দিতেন।’
এর আগে এভাবে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শুরুতে নিরাপত্তা বেষ্টনী ছিল। পরে সেটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় নতুন করে আর করা হয়নি। প্রায় এক বছর ধরে এভাবে বেষ্টনী ছাড়াই কাজ হয়েছে।’
গাজীপুর থেকে ঢাকার বিমানবন্দর পর্যন্ত বিরতিহীন বাস সার্ভিস চালু করতে এই বিআরটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়।
২০১২ সালে বিআরটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। শেষ করার কথা ২০১৭ সালে। তবে নানা জটিলতায় বারবার পিছিয়েছে কাজ। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে ৬৮ শতাংশ। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এই কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
বিআরটি প্রকল্পটি চীনের জিয়াংশু প্রভিন্সিয়াল ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড ও গেজুবা গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড বাস্তবায়ন করছে।
- অনলাইনে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেওয়া ৩২ রোহিঙ্গা আটক
- লাল পাহাড়ে অভিযান, আরসার প্রধান সমন্বয়কসহ ২ জন গ্রেপ্তার
- স্কুল ও মার্কেটের সামনে গাড়ি পার্কিং করলেই শাস্তি
- ২৩ নাবিকদের নিয়ে চট্টগ্রামের পথে জাহান মনি-৩
- চকরিয়ায় বিএনপির ভোট বর্জনের ডাক
- উখিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কে কোন প্রতীক পেলেন
- রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে সদস্য সংগ্রহ করছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- কক্সবাজারে পৌঁছেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটি
- এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ কাল, জানা যাবে যেভাবে
- ডিসি সাহেবের বলী খেলায় চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বাঘা শরীফ
- টেকনাফে ১ লাখ ৫০ হাজার ইয়াবা নিয়ে ১ পাচারকারী আটক
- এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ কাল, জানা যাবে যেভাবে
- রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে সদস্য সংগ্রহ করছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- ২৩ নাবিকদের নিয়ে চট্টগ্রামের পথে জাহান মনি-৩
- কক্সবাজারে পৌঁছেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটি
- ডিসি সাহেবের বলী খেলায় চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বাঘা শরীফ
- উখিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কে কোন প্রতীক পেলেন
- চকরিয়ায় বিএনপির ভোট বর্জনের ডাক
- স্কুল ও মার্কেটের সামনে গাড়ি পার্কিং করলেই শাস্তি
- লাল পাহাড়ে অভিযান, আরসার প্রধান সমন্বয়কসহ ২ জন গ্রেপ্তার
- অনলাইনে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেওয়া ৩২ রোহিঙ্গা আটক
পাঠকের মতামত: