কক্সবাজার, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

ছাত্রী নির্যাতন : সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড!

সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে এক ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনার দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় গত ১৮ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল কর্তৃপক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির ডাকে গত শনিবার ক্যাম্পাসে আসে ভুক্তভোগী ছাত্রী।

প্রায় চার ঘন্টাব্যাপী সেদিনের রাতের ঘটে যাওয়া বর্ণনা শুনেন উভয় তদন্ত কমিটি। এ ছাড়া ভুক্তভোগীকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। তদন্তের স্বার্থে সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী ও তার সহযোগী ক্যাম্পাসে এসেছে। সকাল ৯টা থেকে এখন পর্যন্ত তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে।

এদিকে নির্যাতনের ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। মনিটর সচল থাকলেও বায়োসের ব্যাটারি নষ্ট হওয়ায় ফুটেজ আছে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হল কর্তৃপক্ষের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ চান। পরে গত শনিবার ফুটেজ উদ্ধার করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন কর্তৃপক্ষ। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের দুই টেকনিশিয়ানের শরণাপন্ন হন। পরে তারাও ফুটেজ উদ্ধারে সক্ষম হয়নি। সিসিটিভি দেখতে গিয়ে ফুটেজে ১৯৭০ সালের সময় দেখা যায়। বায়োসের ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ফুটেজে এতো পুরাতন সময় দেখা গেছে।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. আহসানুল আম্বিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এরকম প্রত্যেকটা ডিভাইসে সাধারণত এক ধরণের বায়োসের ব্যাটারি লাগানো থাকে। যন্ত্রটি বন্ধ রাখার পরও যেন সময় ঠিক থাকে সেজন্য এই ব্যাটারি লাগানো হয়। সিসি ক্যামেরা ও এর যন্ত্রপাতি হল কর্তৃপক্ষ নিজেরাই ইনস্টল করেছিল। কবে বায়োসের ব্যাটারি নষ্ট হয়েছে, তা হয়তো তারা বুঝতে পারেনি। কারণ এই ব্যাটারি নষ্ট থাকলেও মনিটরে সিসি ফুটেজ দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, ওই ব্যাটারির মাধ্যমে সিসি ফুটেজে তারিখ ও সময় দেখা যায়। সেটি নষ্ট থাকায় ইনিশিয়াল তারিখ চলে গেছে। ফুটেজ হার্ডডিস্কে থাকার কথা। সেখান থেকে আমরা ফুটেজ রিকভারি করার চেষ্টা করছি।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল বলেন, ওই রাতে আসলে কি ঘটেছিল, সেই তথ্য উদঘাটনে সিসিটিভি ফুটেজ চাওয়া হয়েছিল। হল কর্তৃপক্ষ তা সরবরাহ করতে পারেনি। তারা কিছুদিন সময় নিয়েছে। ফুটেজ আমাদের তদন্তের জন্য সহায়ক হবে বলে মনে করছি।

দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, হলের প্রধান ফটক, অফিস ও করিডোরসহ মোট ১২টি সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। টেকনিক্যাল ত্রুটির কারণে আমরা এখনো ফুটেজ সংগ্রহ করতে পারিনি। হার্ডডিস্কে সমস্যা হওয়ায় ফুটেজ দেখা যাচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দুই-একদিনের মধ্যে সব পাওয়া যাবে বলে আশা রাখছি। হলের সিসিটিভি কারা দেখভাল করে জানতে চাইলে হল প্রভোস্ট বলেন, এগুলোও আমরাই দেখি। তবে আমরা তো এসবে অতটা দক্ষ না। এজন্য মাঝেমধ্যে আইসিটি সেলের কাছে শরণাপন্ন হতে হয়।

পাঠকের মতামত: