কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪

টেকনাফে সারেন্ডারকৃত ১০১ জন ইয়াবাকারবারীর বিচার শুরু

টেকনাফ হাইস্কুল মাঠে আত্মসমর্পণকৃত ১০১ জন ইয়াবাকারবারীর বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার ২২ মার্চ কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে এ সংক্রান্ত পুলিশের দায়ের করা ২ টি মামলার বাদী টেকনাফ মডেল থানার তৎকালীন ওসি (অপারেশন ও কমিউনিটি পুলিশিং) ইন্সপেক্টর শরীফ ইবনে আলম এর জবানবন্দি প্রদানের মাধ্যমে বিচারিক কার্যক্রম শুরু করা হয়।

২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী টেকনাফ হাইস্কুল মাঠে ১০২ জন ইয়াবাকারবারী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, তৎকালীন আইজিপি ড. জাবেদ পাটোয়ারী, কক্সবাজারের সংসদ সদস্যবৃন্দ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে, কক্সবাজারের তৎকালীন এসপি এবিএম মাসুদ হোসেন এর সভাপতিত্বে টেকনাফ হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পণ করে। আত্মসমর্পণকৃত ইয়াবাকারবারীদের সরকারিভাবে আইনী সুযোগ দিয়ে মামলা থেকে ‘সাধারণ ক্ষমা’ করে দেওয়ার ঘোষনা দিয়েছিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

পরে টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ ১০২ জন ইয়াবাকারবারীকে টেকনাফের সদর ইউনিয়নের মহেশখালীয়া পাড়ার পরিত্যক্ত বীচ হ্যাচারী থেকে ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী রাত ২ টা ৪৫ মিনিটে আটক করে মর্মে অভিযোগ আনা হয়। সেখান থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ ইয়াবা টেবলেট এবং প্রচুর দেশীয় অস্ত্র ও কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ এনে টেকনাফ মডেল থানার তৎকালীন ওসি (অপারেশন) ইন্সপেক্টর শরীফ ইবনে আলম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও অস্ত্র আইনে টেকনাফ মডেল থানায় ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী পৃথক ২ টি মামলা দায়ের করে আত্মসমর্পণ করা ইয়াবাকারবারীদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে। মামলা ২ টি হচ্ছে-টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ২৬/২০১৯ ইংরেজি, যার এসপিটি মামলা নম্বর : ৭৩/২০২০ ইংরেজী (অস্ত্র আইন)। টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ২৭/২০১৯ ইংরেজি, যার এসটি মামলা নম্বর : ৩৫৪/২০২০ ইংরেজী (মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন)।

মামলা চলাকালীন ১০২ জন আসামীর মধ্যে কারাগারে থাকাবস্থায় একজন আসামী মৃত্যুবরণ করে। অবশিষ্ট ১০১ জন আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে মঙ্গলবার মামলার বাদী ইন্সপেক্টর শরীফ ইবনে আলম এর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। আদালতে রাষ্ট্র পক্ষে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি এডভোকেট ফরিদুল আলম বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এপিপি এডভোকেট দিলীপ ধর এসময় তাঁকে সহায়তা করেন।

পরে এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ-২, এডভোকেট মঈন উদ্দিন, এডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফা ও এডভোকেট মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী প্রমুখ বাদী ইন্সপেক্টর শরীফ ইবনে আলমকে ১০১ জন আসামীর পক্ষে জেরা করেন। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে আত্মসমর্পণ করার ঘটনাকে কেন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে ভিন্ন স্থান আসামীদের আটক, ইয়াবা টেবলেট ও অস্ত্র উদ্ধার দেখিয়ে মামলা করা হলো-জেরায় এমন ডকুমেন্টারি প্রশ্নের জবাবে বাদী ইন্সপেক্টর শরীফ ইবনে আলম কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। স্বেচ্ছায় সারেন্ডারের প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করে কল্পিত, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করায় বাদীকে জেরা করার সময় আসামী পক্ষের আইনজীবীরা প্রশ্নবানে জর্জরিত করে ফেলেন। মামলার বাদী ইন্সপেক্টর শরীফ ইবনে আলম বর্তমানে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি (তদন্ত) হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

পাঠকের মতামত: