কক্সবাজার, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

দেশে ফিরলেন ভারতে আটক চট্টগ্রামের সন্তোষসহ ৫ ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’

মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় বিভিন্ন সময় ভারতে আটক হওয়া ৩ নারীসহ ৫ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। ধারণা করা হচ্ছে- তারা ভারতে পাচার হয়েছিলেন।

শুক্রবার (১ এপ্রিল) দুপুরে ত্রিপুরার আগরতলা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন।

ফেরত আসা এই ৫ বাংলাদেশি হলেন, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সন্তোষ দেব, নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার বিজয় চুন্নু, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার ময়না বেগম, পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার রোজিনা বেগম এবং কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার কুলসুম বেগম।

ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহযোগিতায় তাদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এসময় আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের পক্ষ থেকে তাদেরকে জরুরি সহায়তা হিসেবে খাবার, কাউন্সেলিং সেবা ও নগদ ১০ হাজার টাকা করে অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়। ব্র্যাক মাইগ্রেশন কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান ও আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার এসব তাদের হাতে তুলে দেন।

ভারত থেকে ফিরে আসা ব্যক্তিদের নথিপত্র সূত্রে জানা গেছে, এই ৫ বাংলাদেশি মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে বিভিন্ন সময়ে আটক হন। এরপর আদালতের নির্দেশে আগরতলার নরসিঙ্গর এলাকার মডার্ন সাইকিয়াট্রিক হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। সুস্থ হওয়ার পর তাদের নাগিরকত্ব যাচাই করা হয়। এরপর স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী যোগাযোগ করে তাদের দেশে ফেরানোর জন্য ভারত সরকারের অনাপত্তি সংগ্রহ করে আগরতলার সহকারী হাইকিমশন।

৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তরের সময় ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের কর্মকর্তাবৃন্দ, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার, বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান, স্বেচ্ছাসেবক সৈয়দ খায়রুল আলম এবং ফেরত আসাদের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘদিন পর তাদের পেয়ে পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

ভারত থেকে ফেরা মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপেজলার ময়না বেগমের ছেলে মনির মিয়া জানান, প্রায় ৯ বছর আগে হঠাৎ তার মা হারিয়ে যান। অনেক খোঁজ করেও তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। কয়েক বছর পার হয়ে যাওয়ার পর তারা ভেবেছিলেন ময়না বেগম হয়তো জীবিত নেই। সপ্তাহ খানেক আগে পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে তারা জানতে পারেন ময়না বেগম আগরতলায় আছেন।

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার দমঘর গ্রামের বিজয় চুন্নুর ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘৪ বছর আগে মানসিক ভারসাম্যহীন ভাই চুন্নু বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। বছর দেড়েক তার বিষয়ে খোঁজখবর করে পরে আমরা হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। ভাই আগরতলায় থাকার তথ্য গত কয়েকদিন আগে পুলিশের কাছে জেনেছি। ভারতে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পরও ভাইয়ের শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তাকে অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’

পাঠকের মতামত: