কক্সবাজার, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

নারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা বন্ধ ঘোষণা তালেবানের

আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন থেকে আর কোনো নারী শিক্ষার্থী শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন না। সে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তালেবানের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রীর একটি চিঠিতে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি। শিগগিরই এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে চিঠিতে।

তালেবানের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী চিঠিতে বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই আইন কার্যকর হলে, আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় নারীদের প্রবেশাধিকার আরও সীমাবদ্ধ করে ফেলবে। কেননা তারা ইতোমধ্যেই মাধ্যমিক শিক্ষা থেকে বাদ পড়েছে।

তিন মাস আগে আফগানিস্তান জুড়ে হাজার হাজার নারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসেছিল। তবে তারা যে বিষয়গুলো অধ্যয়ন করতে পারে তার ওপর ব্যাপক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। পশু চিকিৎসা, বিজ্ঞান, প্রকৌশল, অর্থনীতি এবং কৃষি শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করে তালেবান প্রশাসন। এ ছাড়া দেশটিতে সাংবাদিকতা শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ কঠোরভাবে সীমাবদ্ধ।

২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী ও পুরুষদের জন্য আলাদা শ্রেণিকক্ষের ব্যবস্থা করে তালেবান। এছাড়া নিয়ম জারি করা হয় যে, নারী শিক্ষার্থীদের শুধু নারী ও বৃদ্ধ শিক্ষকরা পড়াতে পারবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের প্রবেশ ও শিক্ষা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। একজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, নারী ও তাদের শক্তিকে ভয় পায় তালেবান। ভবিষ্যতের সঙ্গে আমার সংযোগ তৈরিকারী একমাত্র সেতুটি তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমি কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাব? আমার বিশ্বাস ছিল আমি পড়ালেখা করে ভবিষ্যৎ পরিবর্তন বা জীবনে আলো আনতে পারব। কিন্তু তারা সব শেষ করে দিল।

এর আগে গত নভেম্বরে, তালেবান কর্তৃপক্ষ রাজধানী কাবুলের পার্কগুলোতে নারীদের নিষিদ্ধ করেছিল। তাদের যুক্তি ছিল, সেখানে ইসলামিক আইন মানা হচ্ছে না।

তালেবান ক্ষমতায় যাওয়ার পরই আফগানিস্তানের শিক্ষাখাতে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। গত বছর মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী প্রত্যাহারের পর প্রশিক্ষিত শিক্ষাবিদদের অনেকেই দেশত্যাগ করেন। এ ছাড়া অনেক শিক্ষক বেতন থেকে বঞ্চিত হতে থাকেন।

সূত্র: বিবিসি

পাঠকের মতামত: