কক্সবাজার, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

সাবেক এমপি এড. খালেকুজ্জামানের ২১ তম শাহাদাত বার্ষিকী আজ

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি::

কক্সবাজারের জনপ্রিয় এক নেতার নাম এড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামন। তিনি ছিলেন কক্সবাজার-রামুর দুইবারের নির্বাচিত এমপি। আজ তাঁর ২১
তম শাহাদাত বার্ষিকী।

২০০১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রামুর বাইপাস চত্তরে লাখো মানুষের এক নির্বাচনী জনসভায় তিনি ইন্তেকাল করেছিলেন।
তাঁর ইন্তেকালের ২১ বছর পরেও রামু-কক্সবাজারের মানুষ তাঁকে
স্মরণ করছেন। এভাবেই জনগণের ভালবাসা সিক্ত এড. খালেকুজ্জামান আজো বেচেঁ আছেন তাদের মাঝে।

২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচন পর্যন্ত বেঁচে থাকলে হয়ত ৩য় বারের মত কক্সবাজার সদর-রামুর এমপি হতেন তিনি। কিন্তু মহান আল্লাহর হুকুম ছিল অন্যরকম। নির্বাচনের আগেই তাঁকে ইহকাল ছেড়ে যেতে হয়। লাখ লাখ ভক্ত অনুরক্তদের কাঁদিয়ে তিনি চলে যান পরপারে।

ইন্তেকালের ২১ বছর পরে আজো রামু-কক্সবাজারের জনগণ শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় স্মরণ করছেন তাদের প্রিয় মানুষ মরহুম এড.
খালেকুজ্জামানকে। নানা আয়োজনের মাধ্যমে স্মরণ করা হচ্ছে তাঁকে।

রামু-কক্সবাজারের বিভিন্ন মসজিদে হচ্ছে তাঁর জন্য দোয়া মাহফিল। স্থানীয় সংবাদ পত্রগুলো প্রকাশ করছে তাঁর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিদগ্ধ লেখকদের তথ্যসমৃদ্ধ লেখা। প্রকাশ করছে ক্রোড়পত্র।

খতমে কোরআন, এতিম খানায় ভাল খাবার সরবরাহ ও দোয়া মাহফিলে স্মরণ করা হচ্ছে প্রিয় নেতা খালেকুজ্জামানকে।
এড. খালেকুজ্জামানের বর্ণাঢ্য জীবনী

মোঃ খালেকুজ্জামান ১৬ জানুয়ারী ১৯৫৩ ইংরেজী মৌলবী ফরিদ আহমদ ও বেগম রিজিয়া আহমদের ঐরসে জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর পিতা মরহুম মৌলবী ফরিদ আহমদ ছিলেন সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য ও ১৯৫৭ সালে গঠিত আইআই চুন্দ্রীগড় মন্ত্রীসভার কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রী।

২০০১ সালের ১লা অক্টোবরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র তিনদিন আগে ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০১ রামু বাইপাসের বর্তমান‘খালেকুজ্জামন চত্বরে লাখো মানুষের জনসভায় হেসে হেসেই তিনি দুনিয়া থেকে চলে যান। তখন তিনি ছিলেন, তৎকালীন ৪ দলীয় জোটের কক্সবাজার-রামুর আসনের মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী।

প্রচার বিমুখ এড খালেকুজ্জামান ছিলেন অত্যন্ত ধীশক্তির অধিকারী। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তাঁর মেধার সুস্পষ্ট স্বাক্ষর রেখে গেছেন তিনি। মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের Institute of Business Administration থেকে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে পাশ করেন MBA, IUBAT এর একজন সফল শিক্ষক হিসেবে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের শ্রদ্ধা ও প্রশংসা অর্জন করেছেন।LLBপরীক্ষাতেও তিনি তাঁর প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন।

১৯৯৬ সালে কক্সবাজার-রামু আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তিনি সাড়া জাগিয়েছিলেন পার্লামেন্টে। স্থানীয় স্কুল, কলেজ,

মাদ্রাসা, মসজিদের উন্নয়নে রেখে গেছেন এক অবনদ্য অবদান। রামু কলেজ,কক্সবাজার সিটি কলেজ ও ঈদগাঁও রশীদ আহমদ কলেজ, রামু হাই স্কুল,নাদেরুজ্জামান হাইস্কুলসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উন্নয়নে তিনি পালন করেছেন প্রশংসনীয় ভূমিকা।

কম্পিউটার বিজ্ঞান শিক্ষা প্রবর্তনের জন্য তিনি প্রতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে উদ্বুদ্ধ করেছেন কর্তৃপক্ষকে। আর তাঁর সে মহতী উদ্যোগের সুফল ভোগ করছেন এলাকাবাসী। আজ বেশ কিছু স্কুল-কলেজে কম্পিউটার বিজ্ঞান শিক্ষা কোর্স চালু করা হয়েছে।

তিনি ছিলেন একজন অত্যন্ত মেধাবী ও সফল কম্পিউটার বিজ্ঞানী। বাংলাদেশে কম্পিউটার শিক্ষার বিস্তার তথা কম্পিউটার এর ব্যাপক ব্যবহার জনপ্রিয় করে তোলার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য।

এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অবকাঠামো সৃষ্টিতেও তাঁর ছিল প্রবল আকাঙ্খা। একজন খ্যাতিমান আইনজীবী পেশাগত জীবনে বিনা পারিশ্রমিকে তিনি অনেক অসহায় মানুষের মামলা পরিচালনা করে তাদেরকে কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ করে গেছেন।

সদালাপী, নিরহংকার, সহজ সরল এক দুর্লভ ব্যক্তিত্ব ছিলেন খালেকুজ্জামান। মানুষকে সহজে আপন করে নেবার এক সহজাত ক্ষমতা ছিলো তাঁর।

পাঠকের মতামত: