কক্সবাজার, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রয়োজনের সঙ্গী চার্জার আনিকা জীনাত

চার্জারবিহীন ফোন যেন বইঠা ছাড়া নৌকা। পানিতে দুলবে ঠিকই কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছাবে না। আবার ফোনবিহীন চার্জারও অকেজো। ফোন ব্যবহারকারী মাত্রই এর গুরুত্ব জানেন। ডিভাইস চার্জ করতে বাজারে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের চার্জার। জীবন সহজ করতে এগুলো কাজে লাগাতে পারেন। গাড়িতে থাকা অবস্থায়, পাহাড়ে ট্র্যাকিং করতে গিয়ে বা অনলাইনে ক্লাস করার সময় ফোনের চার্জ শেষ হলেও দুশ্চিন্তার কিছু নেই। প্রয়োজন বুঝে চার্জার কিনলেই সমস্যা মিটে যাবে।

পাওয়ার ব্যাংক
দূরে কোথাও বেড়াতে গেছেন। চারপাশের সুন্দর দৃশ্যের ছবি তুলতে তুলতে ফোনের চার্জই শেষ। এ যুগে এ রকম পরিস্থিতি অসহায় বোধ করায়। কম শক্তিশালী ব্যাটারির কারণে ফোনের চার্জ দ্রুত ফুরায়। ফলে শিগগিরই ফোন কেনার পরিকল্পনা না থাকলে পাওয়ার ব্যাংক কিনতে পারেন। চার্জ নিয়ে আর দুশ্চিন্তায় ভুগতে হবে না।

পাওয়ার ব্যাংক কিনলে তাতে নিয়মিত চার্জ দিতে হবে। ভুলে গেলে কিন্তু কোনো লাভ নেই। যেই লাউ সেই কদু। পাওয়ার ব্যাংকে ফুল চার্জ দিয়ে তারপর ভ্রমণে বের হওয়া উচিত। কোনো কারণে পথে ফোনের চার্জ শেষ হলে কাজে লাগবে। এটি ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, যখন-তখন, যেখানে-সেখানে ব্যবহার করা যায়। পাহাড়ে ট্র্যাকিং করতে গেছেন কিংবা এমন কোনো জায়গায় গেছেন, যেখানে কাছাকাছি কোথাও বিদ্যুৎ নেই। সেখানেও ত্রাতার ভূমিকায় কাজে লাগবে পাওয়ার ব্যাংক। তারের ঝামেলা এড়াতে চাইলে ওয়্যারলেস পাওয়ার ব্যাংক কিনতে পারেন। এই চার্জারের ওপর ফোন রাখলে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই চার্জ হবে। ১০ থেকে ২০ হাজার এমএএইচ শক্তির পাওয়ার ব্যাংক চার্জার মিলবে দেড় হাজার থেকে ৬ হাজার টাকার মধ্যে।

কার চার্জার
জ্যামে বসে প্রেজেন্টেশনের কাজ করছেন। এমন সময় চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়তে হবে। তবে যদি আপনার সঙ্গে কার চার্জার থাকে, তবে চিন্তা নেই। ফোন, ল্যাপটপ- সবই এতে চার্জ করা যাবে। চারটি পোর্টের কার চার্জার পাওয়া যাবে ৩ হাজার টাকার মধ্যে। ওয়ারেন্টি মিলবে ১ বছরের। দেড় হাজার থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে কার চার্জার।

ওয়্যারলেস চার্জিং স্ট্যান্ড
ওয়্যারলেস চার্জিং স্ট্যান্ড
ওয়্যারলেস চার্জিং স্ট্যান্ড
ফোনে অনলাইন ক্লাস বা জুম ভিডিও কলে মিটিং সারতে এই চার্জার কাজে লাগতে পারে। স্ট্যান্ডের ওপরে কয়েলযুক্ত গোল একটি চার্জিং প্যাড আছে এতে। এর ওপর লম্বালম্বি বা সোজাসুজিভাবে ফোন রেখে চার্জ করা যায়। ফোনের সঙ্গে কোনো তার লাগানোর প্রয়োজন পড়ে না। চার্জিং স্ট্যান্ডের সঙ্গে একটি তার থাকে। এটি চার্জে দিয়ে ক্লাস করার জন্য বেশ উপযোগী। কোনো কোনো স্ট্যান্ডের পেছন দিকে স্পিকারও আছে। স্পিকারসহ ১০ ওয়াটের ওয়্যারলেস চার্জিং স্ট্যান্ড পাওয়া যাবে ৬ হাজার টাকার মধ্যে। তবে সব ফোন এই স্ট্যান্ডের মাধ্যমে চার্জ দেওয়া যাবে না। তাই কেনার আগে জেনে নিতে হবে ফোনে ওয়্যারলেস চার্জিং সাপোর্ট ফিচারটি আছে কি না।

চার্জিং অ্যাডাপ্টর
এই অ্যাকসেসরিজটিও চার্জিং স্ট্যান্ডের মতো। পার্থক্য হলো এটি আকারে বেশ ছোট। গোলাকার এই ডিভাইস ফোনের সঙ্গে চুম্বকের মতো আটকে থাকে। ফলে ফোন চার্জিংয়ের সময়ও গেম খেলা যায়। আইফোন ৮ থেকে আইফোন ১২ প্রো পর্যন্ত প্রতিটি মডেল অ্যাপলের ম্যাগসেফ চার্জার সাপোর্ট করবে। এতে এয়ারপডসও চার্জ করা যায়। অ্যাপল ম্যাগসেফ চার্জার কিনতে আইফোন ব্যবহারকারীদের খরচ হবে ৫ হাজার টাকা।
অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের জন্যও চার্জিং অ্যাডাপ্টর পাওয়া যায়। এগুলোর দাম ২ হাজার টাকার আশপাশে।

ওয়্যারলেস চার্জিং কেস
এয়ারপডস চার্জ করতে চাইলে ওয়্যারলেস চার্জিং কেস ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। চার্জিং ম্যাটের ওপর এয়ারপডসসহ কেস রাখলেই তা চার্জ হতে শুরু করবে। কেসের বাইরে আছে এলইডি ইন্ডিকেটর। এর সবুজ আলো দেখে বোঝা যাবে এয়ারপডস চার্জ হচ্ছে কি না। লাইটেনিং কানেক্টরের সাহায্যেও চার্জিং কেসে চার্জ দেওয়া যাবে।
ওয়্যারলেস চার্জিং-সুবিধার এয়ারপডস কিনতে খরচ পড়বে ২২ হাজার টাকা।

সতর্কতা

ওয়্যারলেস চার্জিংয়ে সময় বেশি লাগে। কেব্‌লের চেয়ে ৩০ থেকে ৮০ শতাংশ সময় বেশি নেয় ওয়্যারলেস চার্জার।
চার্জিং প্যাডে ফোন দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকার সুযোগ নেই। ঠিকভাবে রাখা আছে কি না, তা ভালোভাবে খেয়াল করতে হয়। একটু এদিক-সেদিক হলেই ফোন আর চার্জ হয় না।
ওয়্যারলেস প্রযুক্তি এখনো নতুন। তাই প্রচলিত চার্জারের চেয়ে ওয়্যারলেস চার্জারের দাম বেশি।
পাওয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে চার্জ করার সময় ফোন ব্যবহার না করাই ভালো। এতে ফোনের ব্যাটারি উত্তপ্ত হয়, যা ফোনের জন্য ক্ষতিকর।
পাওয়ার ব্যাংক নিয়মিত ব্যবহার করতে হয়। ফেলে রাখলে চার্জ করার ক্ষমতা কমে যায়।

পাঠকের মতামত: