কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

করোনা ভয়ংকর রূপ ধারণের আগেই সতর্ক হউন

প্রিয় এলাকাবাসী,
আস্সালামুআলাইকুম
সবাইকে ঈদ মোবারাক

আশাকরি, সম​য়ের এই করুন পরিস্থিতিতে সবাই কোভিড-১৯ এর বিরূদ্ধে যথেষ্ট সতর্কাবস্থা অবলম্বন করে নিরাপদে দিবসযাপন করতেছেন ও চারপাশের মানুষকে সতর্ক করতেছেন। বিশ্বব্যাপী সৃস্ট এই ভয়ংকর মহামারী মোকাবেলায় প্রত্যেকটা দেশ খুবইসতর্কাবস্থা অবলম্বন করতেছে । সেই ধারাবাহিকতায় আমাদের সরকারও বিভিন্ন
সতর্কতামুলক পদক্ষেপ বাস্তবায়নে আপ্রান চেষ্টা করে আসতেছিল। যতটুকুই সফল
হয়েছে, আলহাম্দুলিল্লাহ !! আসলে এই ঘাড়-ত্যাড়া বাঙ্গালীকে এর চেয়ে বেশি সোজা করা কোন সরকারের পক্ষেই সম্ভব না ! তারপরেও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে, এইটাই হচ্ছে মূল কথা । আমরা লক্ষ্য করেছি- প্রত্যেকে নিজ অবস্থান থেকে
যথেষ্ট মানবিক দায়িত্ত্ব পালন করেছে । আশে-পাশের গরিব মানুষের জন্য ফান্ড ম্যানেজ করে সাহায্য করেছে । আমি নিজেও ঢাকায় থেকে নিজের আশে-পাশের অত্যন্ত গরীব মানুষের জন্য ফান্ড ম্যানেজে শরীক ছিলাম, আলহাম্দুলিল্লাহ !

যাই-হোক, আমি আসলে কিছু তথ্য সেয়ার করার উদ্দেশ্যে লিখছি । আমি নিজে বায়োমেডিক্যাল সায়েন্স এর একজন ছাত্র ও শিক্ষক হিসেবে জনস্বার্থে এই তথ্যগুলো সেয়ার করা নিজের পবিত্র দায়িত্ত্ব মনে করছি ! আসলে কোভিড-১৯ অত্যন্ত ভয়ংকর একটা আবির্ভাব নিয়ে আজ অবধি পুরো বিশ্বকে ভীত​-সংত্রস্ত ও দিশেহারা করে রেখেছে । বিশ্বের অত্যন্ত মেধাবী বিজ্ঞানীরা এই করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারের লক্ষ্যে নিরলসভাবে শ্রম দিয়ে যাচ্ছে।
তাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে কারন এই করোনা ভাইরাসের এপিয়ারেন্স বেশ রহস্যম​য় !! সচরাচর ভাইরাস থেকে অনেকটা আলাদা ভিন্ন কিছু বৈশিষ্ট এর আছে।

এইটা বারবার মিউটেশনের মাধ্যমে ঘনঘন রূপ বদলায় । যার কারনে বিশ্বব্যাপী বেশকিছু জিনোমিক সিকুয়েন্স উন্মোচনের পরও ভ্যাকসিন আবিস্কার অনেক জটিল ও সম​য়-সাপেক্ষ ব্যাপার হ​য়ে দাড়িয়েছে !! সাম​য়িকভাবে নিয়ন্ত্রনের নিমিত্তে
যেসমস্ত ঔষুধ দেওয়া হচ্ছে এগুলো কিন্তু ১০০% সমাধান না বরং পরিস্থিতিকে ট্যাকল দেওয়ার চেষ্টা মাত্র ! তা অনেকের ক্ষেত্রে ভাল ফলাফল ব​য়ে আনতে নাও পারে ! এখন ত আবার কোন ধরনের উপসর্গ ছাড়াই করোনা হানা দিচ্ছে ! অনেকটা নিরবেই শেষ করে দিচ্ছে জীবন প্রদীপ ! বেশ কিছুদিন ধরে গবেষকদের গবেষণা ও আর্টিকেল অবজার্ভ করে যা বুজলাম- এই ভাইরাস অলরেডি অনেক ধরনের জটিলতা সৃস্টি করতেছে ! নিউ-ইয়র্ক ও আরো বেশকিছু শহরের করোনা রোগীদের
Cerebrovascular attack হচ্ছে, blood clotting হচ্ছে আচমকা ও blood channel অনেক সংকীর্ন হচ্ছে !! ব্যাপারটা কিন্তু বেশ জটিল।

এই রহস্যজনক blood clotting এর বিষয়টাকে আমেরিকান সায়েনটিস্টরা Blood Clot Mystery
আখ্যা দিচ্ছে ! এই রক্ত তঞ্ছন সংক্রান্ত জটিলতার জন্য তুরস্কের বেশ কিছু করোনারোগীর Ischemic Stoke ধরা পড়েছে। অধিকন্তু, ACE2 নামক যে রিসেপ্টরকে ভায়া করে এই করোনা ভাইরাস শরীরের ভিতর entry করে সেই রিসেপ্টরের
এক্সপ্রেশন কিন্তু শরীরের অত্যন্ত গুরুত্ত্বপুর্ন অর্গান যেমন হার্ট, কিডনী, ও শ্বাসযন্ত্রেও আছে !! সুতরাং এই সমস্ত অর্গানেও খুব সহজে এই সন্ত্রাসী ভাইরাসটি এন্ট্রি করে মূর্তিমান আতংক নিয়ে হাজির হচ্ছে ও তার সন্ত্রাস কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মারাত্মক জটিলতায় অর্গান ফেইলিয়র ঘটাচ্ছে !
এতে করে অল্প সময়ে অনেক জীবন প্রদীপ নিভে যাচ্ছে!

আবার অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে হঠাৎ করে পা ফুলে যাচ্ছে ও জটিলতা দেখা দিচ্ছে। যারা
ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট ও হার্টের বিভিন্ন সমস্যায় আছে তাদের ক্ষেত্রে এই করোনা ভাইরাসের খুব একটা বেগ পেতে হয় না, সহজেই কপোকাত করে দিচ্ছে ও ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন করাচ্ছে !! আহ ! কত কারিশমা এই ভাইরাসের
কর্মকাণ্ডে ! এ যেন এক মাফিয়া বস !!! জগৎবিখ্যাত বেশকিছু Epidemiologists
ও স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা স্টাডি করে দেখল যে করোনা ভাইরাসের ভয়ংকর রহস্যময় আচরনের টেনশনে চিন্তাগ্রস্থ হয়ে অনেকে এতই ডিপ্রেশনে ভূগতেছিল যে শেষ পর্যন্ত তারা তার ভয়ানক থাবা থেকে বাচার জন্য আত্মহত্যা করে নিজের জীবন নিজেই শেষ করে দিয়ে ক্ষান্ত হল ! বিশ্বাস হচ্ছে না? আরে পাকিস্তান ও আরো কয়েকটি দেশে এই ঘটনা ঘটেছে। এমনকি বাংলাদেশেও এইরকম দুই একটা কেইস আছে।

আমার এক জুনিয়র গবেষক এই তথ্য উদ্ঘাটন করেছে। এতক্ষন ধরে আলোচিত সব তথ্য
সায়েন্সটিফিক আর্টিকেল থেকে নেওয়া। কোনটাই মনগড়া না। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে এই তথ্যগুলো নজরে আসে। দায়িত্বের জায়গা থেকেই জনমনে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যেই সেয়ার করা। আমাদের উখিয়া টেকনাফে এখন কোভিড ১৯ ভয়ানক হানা দেওয়া শুরু করেছে। অনেক বেশি মানুষ প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছে। প্লিজ আপনারা যারা শিক্ষিত আছেন অন্তত নিজেদের পরিবারকে সতর্ক করুন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, পুষ্টিকর খাবার খেয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রাড়ান, সর্বোপরি বেশি বেশি সৃস্টিকর্তাকে স্মরণ করুন। প্রত্যেকে অন্তত নিজের পরিবারের দায়িত্ব নেন। বিশ্বাস করুন পরিবার অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যেকের জন্য, যার একজন সদস্য হারিয়ে যাচ্ছে শুধু সে বুঝতেছে এর জ্বালা !! তাই ভয়ংকর রুপ ধারনের আগেই এই দুষ্ট ভাইরাসের ব্যাপারে সতর্ক হোন। আল্লাহ সহায় হোক।

লেখক:

মোহাম্মাদ নুরুল আমিন,
সহকারী অধ্যাপক, ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্স বিভাগ, অতিশ দীপংকর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যাল​য়, ঢাকা।

পাঠকের মতামত: