শুরুতে রবীন্দ্র জাদেজার ঘূর্ণির তোপ আর শেষদিকে তুষার দেশপান্ডের সঙ্গে মুস্তাফিজুর রহমানের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সম্বনয়ে কুপোকাত হয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্সের ব্যাটিং শিবির। চেন্নাই সুপার কিংসের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে অল্পতেই আটকালো কলকাতার সংগ্রহ।
সোমবার (৮ এপ্রিল) এম চিদাম্বরাম স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে কলকাতার সংগ্রহ ১৩৭ রান। ১৮ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন জাদেজা। ২২ রান খরচায় ২ উইকেট শিকার করেন মুস্তাফিজ। তাতে তিনি দখলে নেন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির স্বীকৃতি বেগুনি টুপি। জাদেজা-মুস্তাফিজ ছাড়াও চেন্নাইয়ের হয়ে বল হাতে সফল ছিলেন তুষার দেশপান্ডে। ৩৩ রান খরচায় তার শিকার ৩ উইকেট।
এদিন ইনিংস শুরুর প্রথম বলেই তুষার দেশপান্ডের আউটসাইড অফ বল খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ফিল সল্ট। তবে শুরু ধাক্কা সামলে দ্বিতীয় উইকেটে জ্বলে ওঠেন সুনীল নারিন ও অঙ্কৃশ রঘুবংশী। চার-ছক্কায় ফুলঝুরিতে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে দলকে তারা এনে দেন ৫৬ রান। এরপর দৃশ্যপটে হাজির হন রবীন্দ্র জাদেজা। সপ্তম ওভারে আক্রমণে এসে ঘুরিয়ে দেন ম্যাচের মোড়।
প্রথম বলেই লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে আউট করেন রঘুবংশীকে। ১৮ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৪ রান করেন তিনি। একই ওভারের পঞ্চম বলে তুলে মারতে গিয়ে লং অফে মহেশ থিকশানার হাতে ধরা পড়েন সুনীল নারিন। ২০ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ২৭ রান করেন তিনি। এক ওভার পর আক্রমণে এসে ভেঙ্কটেশ আইয়ারকেও সাজঘরে ফেরান জাদেজা। ৮ বলে ৩ রানে থামে এ ব্যাটারের ইনিংস। পরপর তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে কলকাতা। যেখান থেকে আর বের হতে পারেনি তারা।
অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নামা রমনদীপ সিং ১২ বলে ১৩ রান করে থিকশানার বলে বোল্ড হন। দলীয় ৮৫ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় তারা। এরপর দলের দুই বিধ্বংসী ব্যাটার রিঙ্কু সিং ও আন্দ্রে রাসেল ক্রিজে নামলেও তারা দলকে উদ্ধার করতে পারেননি। বরং চেন্নাইয়ের বোলারদের বিপরীতে ব্যাট হাতে ভুগেছেন তারা। রিঙ্কু ১৪ বলে ৯ আর রাসেল ১০ বলে ১০ রান করে দেশপান্ডের শিকার হয়েছেন।
অবশ্য রাসেলের উইকেটটি দখলে নিতে পারতেন মুস্তাফিজ। ১৮তম ওভারে আক্রমণে এসে রাসেলকে একের পর এক স্লোয়ার কাটারে কুপোকাত করতে থাকেন তিনি। ওভারের চতুর্থ বলে পরাস্ত হয়ে কট বিহাইন্ডও হয়েছিলেন প্রায়। কিন্তু গ্লাভসে বল আসলেও সেটি লুফে নিতে ব্যর্থ হন মহেন্দ্র সিং ধোনি। এ ওভারে চার ডট দিয়ে ওয়াইড ও নো বলসহ ৯ রান খরচ দেন ফিজ। আর ২০তম ওভারে আক্রমণে এসে মাত্র ২ রান দিয়ে তুলে নেন ২ উইকেট।
ক্রিজের একপ্রান্ত আগলে রাখা শ্রেয়াস প্রথম বলে তুলে মারতে গিয়ে জাদেজার হাতে ধরা পড়েন। ৩২ বলে ৩৪ রানে থামে তার ইনিংস। এরপর দুই ডট দিয়ে চতুর্থ বলে মিচেল স্টার্ককে রাচিন রবীন্দ্রের ক্যাচে পরিণত করে দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পান ফিজ। তাতে এক ম্যাচ পর মাঠে নেমেই আবারও সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির স্বীকৃতি বেগুনি টুপি দখলে নেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা কার্যক্রমে অংশ নিতে বাংলাদেশে অবস্থান করায় আগের ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে খেলতে পারেননি তিনি।
৪ ম্যাচে মুস্তাফিজের উইকেট সংখ্যা এখন ৯। সমান ম্যাচে ৮ উইকেট নিয়ে তার পেছনে রাজস্থান রয়্যালসের যুজবেন্দ্র চাহাল। এদিন ওভারের শেষ দুই বলে মাত্র ২ রান দেন ফিজ। তাতে ১৩৭ রানে থামে কলকাতার ইনিংস। এর আগে প্রথম ২ ওভারে মাত্র ১২ রান খরচ দিয়েছিলেন মুস্তাফিজ।
পাঠকের মতামত: