কক্সবাজার, শনিবার, ৪ মে ২০২৪

টেকনাফের একরামকে ক্রসফায়ার: মামলার সুযোগ চান স্ত্রী-কন্যা

সব হত্যাকাণ্ডের বিচার হয় কিন্তু আব্বুর জন্য কেন আমরা মামলাটুকু করতে পারিনি। আব্বুর জন্য কেন মামলা করছেন না? এমন প্রশ্ন কক্সবাজারের টেকনাফে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত পৌর কাউন্সিলর একরামের দুই মেয়ে তাহিয়া এবং নাহিয়ানের। সম্প্রতি কক্সবাজারে আলোচিত মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের রায় প্রকাশের পর কাউন্সিলর একরামের স্ত্রী আয়েশা একরাম মানবজমিন-এর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় শুনে মেয়ে তাহিয়া এবং নাহিয়ান অনেক কেঁদেছে। তাহিয়া এবং নাহিয়ান প্রশ্ন করছে সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার হয় অথচ আব্বুর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা একটা মামলা পর্যন্ত করতে পারছি না? তিনি বলেন, আমারও তো মামলা করতে ইচ্ছা করছে। আমিও তো সুষ্ঠু বিচার চাই। কিন্তু পারছি না। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে অসংখ্যবার মামলা করার চেষ্টা করেছি।

প্রথম থেকেই আমাদেরকে নানাভাবে হুমকি দেয়া হয়। মামলা করলে আমাদের সমস্যা হবে। থানায় থানায় ঘুরেছি। মামলা নেয়নি কেউ। একরামকে নির্মমভাবে ক্রসফায়ারে হত্যা করার পর আমার শ্বশুর থানায় মামলা করতে যান। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হুমকির মুখে আদালতে আইনজীবীরা মামলা করারও সাহস পাননি।

সেনাসদস্য হত্যার যুগান্তকারী রায় উল্লেখ করে আয়েশা একরাম বলেন, মামলা করতে পারলে আজকে আমরাও হয়তো খুনিদেরকে খুঁজে বের করতে পারতাম। কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। স্বামীর হত্যার বিচার চাই। আমরা কেন বিচার পাবো না? আমি পারলে এখন মামলা করবো। খুনি কারা? কি কারণে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে- সেটা জানতে চাই। পরিবারের সদস্যদের মতামত নিয়ে মামলা করবো। যতবার মামলা করতে গিয়েছি ততবার আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হয়েছে। মামলা করার পরে হয়তো আমাদের ওপর অনেক রকম বিপদ আসতে পারে।
একরামের স্ত্রী বলেন, বড় মেয়ে তাহিয়া এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ছোট মেয়ে নাহিয়ান দশম শ্রেণিতে পড়ে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২৬শে মে কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর একরামুল কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যান। একরামের বিরুদ্ধে ইয়াবা কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ‘বন্দুকযুদ্ধের’ সময় একরামের পকেটে থাকা মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা কথোপকথনসহ একরামের বড় মেয়ে তাহিয়ার কথোপথন ও কান্না সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ব্যাপক আলোচিত হয়। মানবজমিন

পাঠকের মতামত: