কক্সবাজার, শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪

এখনও রাষ্ট্রপতি হননি, অভিনন্দনে বিব্রত স্পিকার

আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে। সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় রাষ্ট্রপতি হবেন আওয়ামী লীগের এটা অন্তত নিশ্চিত। এ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই জোরালো হচ্ছে কে হচ্ছেন নতুন রাষ্ট্রপতি, তার আলোচনা। এ আলোচনার মাঝেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে দেয়া শুভেচ্ছা বার্তা। নির্বাচিত হওয়ার আগে এমন শুভেচ্ছা বার্তায় বিব্রত প্রকাশ করেছেন স্পিকার নিজেই।

বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় মেয়াদের শপথ গ্রহণ করেন। আগামী ২৩ এপ্রিল তার পাঁচ বছরের মেয়াদকাল শেষ হচ্ছে। সংবিধান অনুসারে, একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুবার রাষ্ট্রপতি হতে পারবেন। মেয়াদ অবসানের পূর্ববর্তী ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিতে হবে। সে হিসাবে আগামী ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেছেন, রাষ্ট্রপতি পদে কে আসতে পারেন, এ বিষয়ে কাজ করছেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সর্বজনশ্রদ্ধেয় ব্যক্তিকেই রাষ্ট্রপতি করা হবে। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির শুরুতেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।

এদিকে, ফেসবুক ঘুরে দেখা গেছে ব্যবহারকারীরা স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি যুক্ত করে তাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। কিছু ছবিতে দেখা গেছে স্পিকার শিরীন শারমিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফুলের শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। এসব ছবির ক্যাপশনে ব্যবহারকারীরা ড. শিরিন শারমিন চৌধুরীকে দেশের প্রথম নারী এবং ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

মূলত গেল শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে অভিনন্দন জানিয়ে অনেকেই স্পিকারের মোবাইলে অভিনন্দন বার্তা জানাচ্ছেন। স্পিকারের পরিবারের সদস্যদের ঘনিষ্ঠজনেরাও তাদের মোবাইলে ফোনে খুদেবার্তা ও কল করে অভিনন্দন জানিয়েছেন। স্পিকারের নিজ জেলা নোয়াখালী এবং নির্বাচনী এলাকা রংপুরের পীরগঞ্জ থেকেও অনেকে কল করছেন। এমনকি কয়েকজন সংসদ সদস্য স্পিকারকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন বলেও শোনা গেছে।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানিয়েছে, দলের বিভিন্ন পর্যায়ে ঘনিষ্ঠ, এমন অনেকেই স্পিকারকে আগাম অভিনন্দন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন মন্তব্য লিখছেন। বিষয়টিকে ‘গুজব’ হিসেবে উল্লেখ করে স্পিকারের কার্যালয়ের একাধিক সূত্র দাবি করেছেন, এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বিরক্ত হয়েছেন, তিনি বিব্রতও বটে।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন যেভাবে

রাষ্ট্রপতি হওয়ার সর্বনিম্ন বয়স ৩৫ বছর, সর্বোচ্চ সীমা উল্লেখ নেই। রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। তবে তাঁর সংসদ সদস্য হওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তফসিল ঘোষণার আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অবশ্য জাতীয় সংসদের স্পিকারের সঙ্গে আলোচনা করে থাকেন।

১৯৯১ সালের রাষ্ট্রপতি আইন অনুসারে, ইসি ভোটার তালিকা প্রণয়ন করবে এবং যাচাই-বাছাই করবে মনোনয়নপত্র। প্রার্থী একজন হলে এবং যাচাইয়ে তার মনোনয়নপত্র বৈধ বিবেচিত হলে তাঁকে নির্বাচিত ঘোষণা করবে ইসি। একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে ভোট হবে। সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্তকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর সমান ভোট পেলে প্রার্থীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ফল নির্ধারণ করা হবে।

পাঠকের মতামত: