কক্সবাজার, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

বিশ্বকাপকে সামনে রেখে অভিবাসী শ্রমিক উচ্ছেদ করছে কাতার

দুয়ারে কড়া নাড়ছে কাতার বিশ্বকাপ। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজনে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতিই নেওয়া হয়েছে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। যদিও কাতার বিশ্বকাপকে ঘিরে বিতর্কও কম হয়নি।

ফিফা বিশ্বকাপ উপলক্ষে কাতারে স্টেডিয়াম ও টুর্নামেন্টের অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণে বেশ কয়েকজন অভিবাসী শ্রমিক মৃত্যুবরণ করায় আগেই আয়োজক দেশের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছিল। অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ প্রসঙ্গে এবার আবারও বিতর্কের মুখে কাতার।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিফা বিশ্বকাপ শুরুর আগে কাতারের রাজধানী দোহার বিভিন্ন ভবন থেকে অভিবাসী শ্রমিকদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব শ্রমিকরা এখন নিজেদের জন্য নতুন আবাসস্থল খুঁজছেন। উচ্ছেদ হওয়া অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে এশিয়ান ও আফ্রিকানদের সংখ্যাই বেশি।

কাতার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, যে ভবনগুলো থেকে অভিবাসী শ্রমিকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, সেগুলো বসবাসের অযোগ্য এবং এ বিষয়ে যথাযথ নোটিশও দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া, সেখানে থাকা অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য বিকল্প হিসেবে নিরাপদ এবং উপযুক্ত স্থান পাওয়া গেছে বলেও জানানো হয়।

আসন্ন ফিফা বিশ্বকাপ উপলক্ষে আল-মানসুরার আশেপাশের এলাকাগুলো পুনরায় ব্যাপকভাবে সংস্কার করা হয়েছে। বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হওয়ার পর এসব এলাকার বিভিন্ন ভবনের অ্যাপার্টমেন্টে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফুটবলপ্রেমীরা থাকবেন। তাই তাদের আবাসন নিশ্চিতে অভিবাসী শ্রমিকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

শনিবার ভোরে ইউনুস নামের এক বাংলাদেশি গাড়িচালককে তার ট্রাকের পেছনে বিছানা পেতে ঘুমাতে দেখা যায়। তিন দিন আগে তাকে তার ফ্ল্যাট থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয়। নতুন কোনো আবাসস্থল পাওয়ার আগে এই ট্রাকই তার সম্বল।

 

ইউনুস বলেন, প্রথম রাতে খুবই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এবং সবার জন্য অন্য জায়গায় যাওয়ার পর্যাপ্ত জায়গা ছিল না। তিন বছরের মধ্যে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো তাকে জোরপূর্বক সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।

কাতার এক সরকারি কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি ছাড়াই বসবাসের অনুপযোগী জায়গায় বসবাসকারী বাসিন্দাদের একটি যুক্তিসঙ্গত সময়সীমার মধ্যে অন্যত্র চলে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। তাছাড়া, কর্মকর্তারা সরে যাওয়া ব্যক্তিদের নিরাপদ এবং উপযুক্ত বাসস্থানে পুনর্বাসনের বিষয়টিও সর্বদা নিশ্চিত করেন।

স্টেডিয়াম ও টুর্নামেন্টের অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণে বেশ কয়েকজন অভিবাসী শ্রমিক মৃত্যুর পাশাপাশি শ্রমজীবীদের অবৈতনিক মজুরি নিয়েও সমালোচিত হয়েছে আয়োজক কাতার। সাম্প্রতিক সময়ে এসব পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক ইউনিয়নগুলোর মতে তা যথেষ্ট না।

আগামী ২০ নভেম্বর স্বাগতিক কাতার এবং ইকুয়েডরের মধ্যকার ম্যাচের মাধ্যমে বিশ্বকাপ ফুটবলের ২২তম আসরের বাঁশি বেজে উঠবে। পরবর্তীতে ১৮ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠিতব্য ফাইনালের মাধ্যমে কাতার বিশ্বকাপের পর্দা নামবে।

পাঠকের মতামত: