কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

মিয়ানমারে জোরালো হচ্ছে বিক্ষোভ, যোগ দিয়েছেন শিক্ষকরাও

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে চলমান অসহযোগ আন্দোলন ক্রমাগত জোরালো হচ্ছে। শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে এবার বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন শিক্ষকরাও। শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে দাগন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। এদিন অভিযান চালিয়ে রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি এবং ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের আটক করা হয়। রাজধানী নেপিডো ও প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় রাস্তায় টহল দিতে শুরু করে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। দেশজুড়ে ঘোষণা করা হয় এক বছরের জরুরি অবস্থা। অপরদিকে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে মিয়ানমারে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন সু চি সমর্থকরা। এতে শামিল হয়েছেন বিভিন্ন পেশার মানুষ। পাশাপাশি আরও বিভিন্ন আন্দোলন-কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।

শুক্রবার ইয়াঙ্গুনের ড্যাগন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন কয়েক শ’ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। সেসময় তারা প্রতীকীভাবে তিন আঙুলের স্যালুট প্রদর্শন করেন। ওই অঞ্চলের বিক্ষোভকারীরা কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে নিজেদের বিরোধিতা প্রকাশ করতে এ প্রতীক ব্যবহার করে থাকেন।

মিন সিথু নামের এক শিক্ষার্থী ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘এ ধরনের সেনা কর্তৃত্বের অধীনে আমরা আমাদের প্রজন্মকে ভুগতে দেব না।’

ড্যাগন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সুচি’র দল এনএলডি’র পতাকার রঙের সঙ্গে মিলিয়ে লাল পতাকা হাতে বিক্ষোভ করেন। কেউ কেউ আবার লাল রিবন পরেছিলেন। তারা স্লোগান দিতে থাকেন ‘সু চি মা দীর্ঘজীবী হোন।’

মিয়ানমারে আরও বেশ কিছু এলাকায় বিক্ষোভ হচ্ছে। ইয়াঙ্গুনসহ কোনও কোনও শহরের বাসিন্দারা বাড়িতে বসে রাত্রিকালীন বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন। রাতে থালা-বাসন বাজিয়ে, বিপ্লবী গান গেয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তারা। কাউকে কাউকে দিনের বেলা ফ্ল্যাশ মব করতেও দেখা যাচ্ছে।

স্বাস্থ্যকর্মী, শিক্ষক ও সরকারি কর্মচারীদের কেউ ছোট ছোট বিক্ষোভ আয়োজন করছেন, আবার কেউ কেউ ধর্মঘট পালন করছেন। অনেকে আবার লাল রিবনের মতো বিভিন্ন অবমাননার প্রতীক পরে কাজ করছেন।

বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) মান্দালয় মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের হাতে থাকা বিভিন্ন ব্যানারের একটিতে লেখা ছিল, ‘সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে জনসাধারণের বিক্ষোভ।’ আন্দোলনকারীরা স্লোগান দিচ্ছিলেন, ‘আমাদের গ্রেফতার হওয়া নেতাদের এখনই মুক্তি দিন, এখনই মুক্তি দিন।’ পরে বিক্ষোভস্থল থেকে ৪ জনকে আটক করা হয়।

সু চি সমর্থকদের বিরুদ্ধে ধর-পাকড় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার সকালে ইয়াঙ্গুনে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সু চি’র দল এনএলডির শীর্ষস্থানীয় নেতা উইন হতেইনকে।বিবিসিকে গ্রেফতার হওয়া হতেইন জানান, গ্রেফতারের পর তাকে নেপিডোতে নিয়েছে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেফতার করা হলেও তাকে নির্দিষ্ট অভিযোগ জানানো হয়নি। ৭৯ বছরের এই নেতা সু চির বড় সমর্থক ছিলেন। অভ্যুত্থানের পর একাধিক সাক্ষাৎকারে তিনি সামরিকবাহিনীর সমালোচনা করেছিলেন।

পাঠকের মতামত: