কক্সবাজার, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

রোহিঙ্গা শিবিরে আগুন নাশকতা কি-না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন, কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা নাশকতা ছিল কি-না, তা খতিয়ে দেখছে সরকার।

সোমবার (৬ মার্চ) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদকিদের সঙ্গে আলাপকালে একথা বলেন তিনি।

এর আগে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন নিয়ে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘দেখুন, এটি নাশকতা কি-না, ষড়যন্ত্র কি-না; সেটি আমরা দেখছি। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তারা সিলিন্ডারে রান্নাবান্না করে। সেখানে পাশেই আমাদের সাতটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট রয়েছে। অস্থায়ী ক্যাম্পগুলোতে আগুন লাগলে নিমেষে শেষ হয়ে যায়। ঘটনাটি সে রকমই ঘটেছে।’

‘তবে কীভাবে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা আমরা তদন্ত করছি। তাতে যদি কোনো নাশকতা, ষড়যন্ত্র কিংবা অন্য ধরনের কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়, সেগুলো আমরা দেখব। সে নিয়ে আমরা কাজ করছি। যারা গৃহহারা হয়েছেন, তাদের জন্য আপাতত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আমরা ভাসানচরে বিশাল একটি ব্যবস্থা রেখেছি, যারা স্বেচ্ছায় যেতে চান, তাদের সেখানে নিয়ে যাচ্ছি,’ যোগ করেন তিনি।

এ সময় পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসায় হামলা নিয়েও কথা বলেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আহমদনগর এলাকায় কয়েক হাজার কাদিয়ানি ও আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বসবাস। প্রতিবারই তারা দুই দিনব্যাপী একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান করে। এবারও সেই অনুষ্ঠান করতে যাওয়ায় তাদের ওপর জামায়াতে ইসলামীর অ্যাকটিভিস্ট ও বিএনপি নেতারা একসঙ্গে জড়িত হয়ে তাদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে তাদের ঘরবাড়িতে আগুন ধরায়। যেখানে অনুষ্ঠান হচ্ছিল, সেখানেও আগুন ধরায়।’

‘এতে একজন কাদিয়ানি সদস্য মারা যান। মারামারি করতে গিয়ে একজন জামায়াতের সদস্যও আহত হয়ে মারা যা়ন। এ নিয়ে সাতটি মামলা হয়েছে। ৮১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বিএনপি নেতা ফজলে রাব্বি আছেন। তিনি স্বীকারোক্তি দিয়েছেন যে সমাবেশটি বন্ধ করতে এসেছিলেন। ঘটনাগুলোর নেপথ্যে তিনিও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন,’ যোগ করেন মন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, ‘সেখানে র‌্যাবের এক সদস্যও আহত হয়েছেন। তার মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই দিতে হয়েছে। র‌্যাবের একটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী চরম ধৈর্যের সঙ্গে সেটি মোকাবিলা করেছে। সেখানকার পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। যারাই মামলা দিচ্ছে, মামলা নেয়া হচ্ছে।’

পঞ্চগড়ের ঘটনায় গোয়েন্দারা আগে তথ্য পেয়েছিলেন কি-না; জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এবার তারা এতটা মারমুখী কেন হয়েছিল, আমরা তা তদন্ত করে দেখছি। পুলিশের কোনো ব্যর্থতা আছে কি-না, সেটাও আমরা দেখছি। আমাদের কোনো ব্যর্থতা থাকলে আমরা দেখছি, সেটি নিয়ে এরই মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কোনো গাফিলতি থাকলে আমরা অবশ্যই দেখব, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

বিএনপিকে দমন করতেই পঞ্চগড়ের ঘটনা সরকার ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধী দলের। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো জনগণের কাছেই এই প্রশ্নটি রাখব যে আওয়ামী লীগ কোনো সময় এমন কোনো ঘটনা ঘটিয়েছে কি-না। ২০১৪-১৫ সালে গাড়ি, মানুষ পোড়ানোর ঘটনা আপনারা দেখেছেন। তারা আগে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের দল। জনগণ নিয়েই তারা চলে। জনগণের বিপক্ষে কোনোদিন আওয়ামী লীগ যায় না। আর আওয়ামী লীগ যেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে, সেখানে এমন কোনো ঘটনা তারা কেন ঘটাবে? যারা যারা ঘটিয়েছে, তারা আড়ালে চলে যেতে বিভ্রান্তিকর খবর আপনাদের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে।’

পাঠকের মতামত: