কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

বিশ্ব মেধাস্বত্ব দিবস আজ

 

আজ ২৬ এপ্রিল (রোববার) বিশ্ব মেধাস্বত্ব দিবস। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও একযোগে পালিত হচ্ছে বিশ্ব মেধাস্বত্ব দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘ইনোভেট অপর দ্য গ্রিন ফিউচার।’

অন্যান্য বছর দিবসটি নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে পালিত হলেও এ বছর অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনার সংক্রমণের কারণে আনুষ্ঠানিকতা পরিহার করা হয়েছে।

তবে দিবসটি পালন উপলক্ষে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় আজ রোববার বিকেল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টা অনলাইন ডিসকাশনের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেজিস্ট্রার অব কপি রাইটস (যুগ্ম সচিব) জাফর রাজা চৌধুরী।

তিনি বলেন, কপি রাইট কাজটি সৃষ্টিশীলতার সঙ্গে জড়িত। যারা গান লিখছেন, সুর করছেন, বই লিখছেন বা অন্য কোনো আবিস্কার করছেন, তারা তা রেজিস্ট্রি করে রাখছেন না। সারাবিশ্বের মধ্যে যারা প্রথম সফল হয়ে কপি রাইট করে রাখবেন, তিনিই এর ব্যবসায়িক ও বাণিজ্যিক সুফল পাবেন।

বাংলাদেশ সৃজনশীল পুস্তক প্রকাশক সমিতির নির্বাহী পরিচালক কামরুল হাসান শায়ক বলেন, প্রকাশনা খাতের কথা বলতে পারি- বাংলাদেশে এখন অনেক ভালো মানের পুস্তক প্রকাশিত হচ্ছে। বড় লেখক, বড় গবেষক তৈরি হচ্ছেন। তারা তাদের সৃষ্টিগুলো ধরে রাখতে না পারলে তা অন্য দেশের অন্য কারও হাতে চলে যাওয়ার জোর আশঙ্কা থেকে যায়।

মেধাস্বত্ব ধরে না রাখার ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে, শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি, সবকিছুই ক্ষতির সম্মুখিন হয়। মিউজিক ও সফটওয়্যার পাইরেসি বাংলাদেশে প্রকট আকার ধারণ করেছে। সাধারণভাবে মেধাস্বত্বকে কপি রাইট, পেটেন্ট, ট্রেড মার্ক, ভৌগোলিক ইঙ্গিত (জিআই) প্রভৃতি বিভিন্ন আঙ্গিকে ভাগ করা হয়। বিভিন্ন রকমের মেধাস্বত্বের মধ্যে কপি রাইট কাজ করে শৈল্পিক বিষয়ের ক্ষেত্রে। যেমন সাহিত্য, শিল্পকলা এসব নিয়ে। পেটেন্ট নির্ধারণ করে দেয় মালিকানাস্বত্ব। ট্রেডমার্ক হলো এমন এক নিদর্শন, যা পণ্য বা সেবাকে অন্য পণ্য বা সেবা থেকে পৃথক করে। ভৌগোলিক (জিআই) হলো ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সুরক্ষার অন্যতম হাতিয়ার।

সংশ্নিষ্টরা জানান, কেবল ব্যক্তি নয়, অসচেতনতার কারণে বহু দেশও বহু কিছু হারিয়েছে। ব্রাজিল জীববৈচিত্র্যের দিক দিয়ে অত্যন্ত সমৃদ্ধ একটি দেশ, যেখানে বিশ্বের ২২% উদ্ভিদের প্রজাতি জন্মে থাকে। কিন্তু এদের অর্ধেকের বেশিই এখন বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির দখলে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোমেনুর রসুল বলেন, আমাদের সচেতনতার অভাবে জামদানি, হস্তশিল্প, ওষুধসহ দেশের ২৮টি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ইলেকট্রনিকস পণ্য, সফটওয়্যার ও টেলিকম শিল্প, চামড়া খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাইরেটেড পণ্য এড়িয়ে চলার আহ্বান সাধারণের মাঝে তেমন কোনো সাড়া ফেলছে না। বাজারে নকল পণ্যের ছড়াছড়ি। আসল বা নকল বোঝা দায়। এ বিষয়ে সচেতনতা প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে সাবেক রেজিস্ট্রার অব কপি রাইটস (যুগ্ম সচিব) মো. নবীরুল ইসলাম বলেন, মেধাস্বত্ব হলো একটি সম্পত্তি, জমিজমার মতোই। তাই এর রেজিস্ট্রি করা প্রয়োজন। তার উত্তরাধিকারী এর সুফল ভোগ করবেন। আইন অনুসারে, কোনো কিছুর স্রষ্টা বা উদ্ভাবক তার জীবনকাল ও তার মৃত্যুর পর ৬০ বছর পর্যন্ত এর মালিকানা ভোগ করতে পারবেন।

পাঠকের মতামত: