কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজার-দোহাজারী রেললাইন সম্প্রসারণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে

আমিনুল ইসলাম রুবেল::

দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৬টি উপজেলা চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, পটিয়া, বোয়ালখালী ছাড়াও বান্দরবান লামা আলীকদমসহ কক্সবাজার জেলার চকরিয়া ঈদগাঁও এবং রামু এলাকার অর্ধকোটি মানুষের দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন-দোহাজারী কক্সবাজার রেললাইন নির্মানের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত প্রায় ১২৮কি:মি:রেলপথ নির্মাণ ছাড়াও বিভিনস্থানে লাইন সংস্কার এবং আধুনিকরণ কাজ চলছে। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হলে চুড়ান্তভাবে রেললাইন চালু হবে বলে সংশ্লিষ্টসুত্রে জানা যায়।

প্রকল্পের কাজটি দুইভাগে বিভক্ত হয়ে দোহাজারী হতে ৫২ কিলোমিটার চকরিয়া পর্যন্ত সিআরইসি তমা কনষ্ট্রাকশন ও চায়না কোম্পানি সহ কোম্পানি এবং চকরিয়া থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার সিইসিসি ম্যাক্স কোম্পানি রেললাইন সম্প্রসারনের কাজ পরিচালনা করছেন। বর্তমানে ৪৫-৫০ ভাগ কাজ দৃশ্যমান হতে চলেছে রেললাইন সড়ক এবং ব্রীজের আনুষঙ্গিক কার্যক্রম। এরইমধ্যে চট্টগ্রামের দোহাজারী হতে কক্সবাজার পর্যন্ত বিভিন্ন উপজেলায় মামলা জটিলতার কারণে অনেক ভুমি দাতারা তাদের ন্যায্য মুল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত।

এদের সমস্যা সমাধান হলে প্রকল্পের কাজ আরো অধিকতর গতি পাবে। সম্প্রতি এই রেললাইন প্রকল্পের কাজের সার্বিক পরিদর্শন করতে কক্সবাজার ও দোহাজারীতে আসেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন সহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সাথে জড়িত কর্মকর্তাবৃন্দ। বর্তমানে রাস্তা নির্মান ও মাটি ভরাটের কাজ গাড়ী ও অত্যাধুনিক যন্ত্রাপাতি নিয়ে দুই ঠিকাদার কোম্পানি শত শত শ্রমিক রাত দিন কাজ করে চলেছে। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, এই প্রকল্পটির ব্যায় ধরা হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার ৩৫ কোটি টাকা। কিন্তু কাজের পরিধি বৃদ্ধি হওয়ার কারণে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার মতো অতিরিক্ত ব্যয় ধরা হয়েছে। ২০১১সালে ৩ এপ্রিল দোহাজারী কক্সবাজার রামু ভায়া ঘুমধুম পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নির্মান কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চট্টগ্রাম হয়ে দোহাজারী রামু কক্সবাজার যাওয়ার পথে রামু হবে জংশন ষ্টেশন। আর সেখান থেকে একটি লাইন চলে যাবে সমূদ্র সৈকত কক্সবাজার। আরেকটি লাইন পূর্বদিক হয়ে মায়ানমারের কাছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম। কক্সবাজার সমূদ্র সৈকতের পাশে ষ্টেশনটি হবে ঝিনুক আকৃতির এই ঝিনুকের ভিতরেই হবে প্লাটফরম এবং যাত্রী আসা যাওয়ার লাউঞ্জ। দোহাজারী কক্সবাজার প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে পর্যটক ও স্থানীয় জনগনের জন্য নিরাপদ আরামদায়ক সাশ্রয়ী পরিবেশ বান্ধব যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রবর্তন হবে। সহজেই এই অঞ্চলের মানুষের কম খরচে লবন মাছ কাঁচামাল, বনজ ও কৃষিজাত পণ্যসামগ্রী যাতায়াতের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি পাবে।

এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্প পরিচালক পিডি মোঃ মফিজুর রহমান জানান, সেতু নির্মানের কাজ সহ রেললাইন সড়ক নির্মানের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। এদিকে চন্দনাইশ, সাতকানিয়ার,মধ্য দিয়ে প্রবাহিত শঙ্খনদীর রেলওয়ে ব্রীজের আশপাশে থেকে নদীর তলদেশ হতে বালু উত্তোলনের প্রসঙ্গে দ্বায়িত্বরত ঠিকাদার কোম্পানি তমা কনষ্ট্রাকশনের সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ার রোকনুজ্জামান বলেন, রেলওয়ের আওতাভুক্ত কাজ নদীর প্রবাহ দ্বারা চলমান রাখতে ব্রীজের আশপাশে রিভার ট্রেনিং ওয়ার্ক করতে হবে বলে জানিয়েছেন।

পাঠকের মতামত: