কক্সবাজার, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

করোনায় দেশে আরও একজনের মৃত্যু, মোট ২

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো দুই-এ। এছাড়া নতুন করে আরও চারজনের শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে। শনিবার (২১ মার্চ) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় যাদের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, তাতে আরও চারজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দুইজনে দাঁড়ালো।

তিনি বলেন, ‘নতুন করে আরো চারজন আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা সব মিলিয়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে। সারাদেশে ১৪ হাজার মানুষ রয়েছেন হোম কোয়ারেন্টাইনে। আর প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫০ জন।’

গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। উহানে ভয়াবহ আকার ধারণ করার পর প্রাণঘাতী ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন দেশে। ইতোমধ্যে ১৭০টির মতো দেশে ছড়িয়ে পড়ে করোনা। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে সাড়ে ১১ হাজারের মতো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় পৌনে তিন লাখ মানুষ।

প্রায় দুই সপ্তাহ আগে বাংলাদেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। গত ৮ মার্চ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পক্ষ থেকে করোনায় তিনজনের আক্রান্তের খবর জানানো হয়। পরে আরও ১৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়।

এর মধ্যে গত ১৮ মার্চ করোনায় দেশে প্রথম একজনের মৃত্যুর খবর জানায় আইইডিসিআর। এরপর আজ নতুন করে এই তালিকায় যোগ হয় আরও একজনের নাম। সবমিলিয়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৪ জন।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর তা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় করোনা ভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারি।

সব মিলিয়ে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৭৬ হাজার ৪৬২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন ১১ হাজার ৪১৭ জন। এছাড়া চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯১ হাজার ৯৫৪ জন।

এদিকে করোনা প্রতিরোধে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে সভা-সমাবেশ ও জনজমায়েতের ক্ষেত্রেও। মাদারীপুরের শিবচর উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

শুক্রবারও অনেক দেশে করোনায় আক্রান্ত শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে সবচেয়ে কঠিন দিন অতিক্রম করছে ইতালি, স্পেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানসহ বেশকিছু দেশ। কেননা এসব দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে।

করোনায় একদিনে মৃত্যুর নতুন রেকর্ড

গত কয়েক মাসে চীন যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছে ঠিক একই রকম পরিস্থিতি এখন ইতালিতে। বরং চীনে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলেও এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যায় চীনসহ অন্যান্য দেশকে ছাড়িয়ে গেছে ইতালি। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭ হাজার ২১। সেখানে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৯৮৬।

শুক্রবার সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ইতালিতে। সেখানে মোট ৬২৭ জন মারা গেছেন। এটি একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এর আগে বিশ্বের কোথাও এমনকি করোনার সূতিকাগার হিসাবে পরিচিত চীনের উহান শহরেও একদিনে এত মানুষ মারা যায়নি। ফলে এখন পর্যন্ত দেশটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৪ হাজার ৩২ জনে পৌঁছেছে। আর চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়েছে ৫ হাজার ১২৯ জন। ইউরোপের দেশটিতে ৩৭ হাজার ৮৬০ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে আক্রান্তদের মধ্যে ২ হাজার ৬৫৫ জনের অবস্থা গুরুতর।

গত বুধবারই করোনায় মৃত্যুর সংখ্যায় চীনকে ছাড়িয়ে যায় ইতালি। সেদিন সেখানে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৪৭৫ জন কোভিড-১৯ রোগী। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেটাই ছিল যেকোনও দেশের জন্য একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। শুক্রবার নিজেদের সেই রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে তারা।

পাঠকের মতামত: