কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

ভারতের জম্মু থেকে পালিয়ে রোহিঙ্গারা ডুকছে বাংলাদেশে

নিজস্ব প্রতিনিধি::
ভারতের জম্মুতে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের আটক করে সীমান্ত দিয়ে মায়ানমারে ফেরত পাঠাচ্ছে দেশটির প্রশাসন।
মায়ানমারে যাওয়ার পর সেসব রোহিঙ্গারা পুনরায় পালিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্যাম্পে।
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের জম্মু শহরে বসবাসরত জাতিসংঘের নিবন্ধনধারী শরণার্থী সহ ১৭০ রোহিঙ্গাকে গত বছরের ৮ মার্চ আটক করে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, যাদের রাখা হয় জম্মুর নিকটবর্তী হিরানগর জেলে।
আটকের এক সপ্তাহ পর সেসব রোহিঙ্গাকে মনিপুর প্রদেশের সীমান্ত ট্রানজিট দিয়ে মায়ানমারের  দায়িত্বরত মায়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)’র হাতে তুলে দেয় ভারতীয় পুলিশ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মায়ানমারে ফেরত গেলেও সেখানে কিছুদিন বসবাসের পর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে তারা, আশ্রয় নিচ্ছে উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে।
যাদের একজন আলী হোসন (৩৫) নামের এক রোহিঙ্গা, যিনি দশ বছর জম্মুতে বসবাসের পর ফেরত গিয়েছিলেন মায়ানমারে, সম্প্রতি তিনি সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে চলে এসেছেন উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের স্বজনদের কাছে।
আলী বলেন, “জম্মুতে আমাদের উপর অত্যাচার শুরু হয়েছে। আমরা কোথায় যাবো? দেশে গিয়েও শান্তি নেই, বাংলাদেশ আমাদের জন্য নিরাপদ। তাই এখানে চলে এসেছি।”
অন্যদিকে, জম্মুতে আটক-নিপীড়ন শুরু হওয়ার পর সেখানে বসবাসরত ৫ হাজারের অধিক রোহিঙ্গা শহরটি ছেড়ে পালাচ্ছেন, যাদের অনেকেই দালাল ধরে পাড়ি জমাচ্ছেন বাংলাদেশে।
গত শনিবার (২৮ মে) সন্ধ্যায় উখিয়ার লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আত্নীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়া ভারত থেকে পলাতক দুই রোহিঙ্গা পরিবারের সাত সদস্য কে আটক করে ১৪ এপিবিএন। আটকদের ক্যাম্প ইনচার্জ (সিআইসি) কার্যালয়ের মাধ্যমে কুতুপালং ট্রানজিট ক্যাম্পে পাঠানো হয় বলে জানান ১৪ এপিবিএন অধিনায়ক নাঈমুল হক।
তিনি বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভারত থেকে সীমান্ত হয়ে ক্যাম্পে পালিয়ে আসার কথা স্বীকার করেছে আটক দুই পরিবার, যাদের ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হয়েছে।”
ট্রানজিট ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের একজন মোহাম্মদ তাহির (৩৩) জানান, “জম্মুতে থাকা রোহিঙ্গারা অশান্তিতে আছে। জাতিসংঘের শরণার্থী কার্ড থাকার পর ও সেখানকার পুলিশ রোহিঙ্গাদের ধরে মায়ানমারে পাঠিয়ে দিচ্ছে। আমরা তাদের ভয়ে  কুতুপালং পালিয়ে আসছি, আমার মতো অনেকেই চলে এসেছে এখানে।”
ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত তিনটি এপিবিএনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত দুই মাসে কমপক্ষে দেড় হাজার রোহিঙ্গা কে ট্রানজিট ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে যারা ভারত থেকে পালিয়ে এসেছেন।

পাঠকের মতামত: