কক্সবাজার, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

উখিয়ায় অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি নেই

মোহাম্মদ ইব্রাহিম মোস্তফা, উখিয়া বার্তা ডটকম::

উখিয়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকায় সুপেয় পানির জন্য স্থাপন করা নলকূপগুলোতে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে অপেক্ষাকৃত উঁচু এলাকায় এ সংকটের সৃষ্টি হলেও বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজন কূপের খোলা পানি ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে। এতে পানিবাহিত রোগে লোকজন আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় চিকিত্সকেরা।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী বলছেন, বোরো চাষাবাদের জন্য স্থাপন করা গভীর নলকূপের কারণে পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাওয়ার ফলে টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। এসমস্যা বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিমত, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারণ চলমান খরা ও অনাবৃষ্টি।

জনস্বাস্থ্য বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জানান, বিগত দিনের যে কোনো সময়ে এভাবে পানির স্তর নিচে নেমে যায়নি।
পালংখালী ইউনিয়নের তেলখুলা গ্রামের গৃহিণী আলেয়া বেগম বলেন, রোহিঙ্গা আসার পর থেকে পানির জন্য আমরা আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি। বর্ষাকাল যেন দীর্ঘস্থায়ী হয়, আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি। বছরের ১২ মাসের মধ্যে বর্ষাকালের ৬-৭ মাস ভালো পানি পাই। বাকি সময়টুকু খাবার পানির তীব্র সংকট থাকে৷

মৌলভীপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান জানান, এ মৌসুমে বসত-বাড়ির নলকূপের পানি দিয়ে বাড়ির আশ-পাশে জমি চাষাবাদ করা সম্ভব হতো। টিউবওয়েলে পানি না থাকার কারণে জমিগুলো অনাবাদী হয়ে পড়ে আছে।

পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, উখিয়া উপজেলার সাত লক্ষাধিক রোহিঙ্গার খাবার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য যত্রতত্রভাবে বসানো হয়েছে গভীর নলকূপ। যার ফলে পানির স্তর স্বাভাবিক অবস্থা থেকে ৩৫/৪৫ ফুট নিচে নেমে গেছে। এমতাবস্থায় বেশির ভাগ অগভীর নলকূপে পানি না পাওয়ার কারণে বাসা-বাড়িতে দেখা দিয়েছে খাবার পানি সংকট।

উখিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ তালুকদার জানান, পানি সংকটের কারণে রবিশস্যসহ ফলমূল ও শাক-সবজি চাষাবাদ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তিনি বলেন, টিউবওয়েলের পাশাপশি খালের পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে সর্বসাধারণ উভয় সংকটে পড়েছে।

কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শেখ মো: নাজমুল হুদা জানান, নির্বিচারে গাছপালা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ভবিষ্যতে পরিবেশের আরো অবনতি হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

পাঠকের মতামত: